বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু

 বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু

জাপানের আর্থিক ও কারিগরী সহায়তায় যমুনা নদীর উপর বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতু র ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু । এটির দৈর্ঘ্য হবে ৪.৮ কিমি। সেতুটি নির্মিত হলে তা হবে দেশের সর্ববৃহৎ রেলসেতু ।

বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতুতে সিঙ্গেল লাইনের কারণে ট্রেনকে সেতু র দুই পাশে অপেক্ষা করতে হয়, এছাড়াও সেতুটির ওজন ও চলাচলকারী ট্রেনের গতির বিষয়ে সীমাবদ্ধতা থাকায় পৃথক একটি রেলসেতু র প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ লক্ষ্যে ২০১৬ সালে ECNEC সভায় এতদসংক্রান্ত DPP অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটি শুরু হতে ৪ বছরের মত বিলম্ব হওয়ায় প্রাথমিকভাবে যে ব্যয় ধরা হয়েছিল তা বেড়ে গিয়ে বর্তমানে ১৬ হাজার ৭৮০.৯৫ কোটি টাকায় নির্ধারন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২ হাজার ১৪৯.১৯ কোটি টাকা (৭২.৪%) JICA থেকে ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ২টি ঋণচুক্তির আওতায়, যার একটি ১ শতাংশ ও অন্যটি ০.৬ শতাংশ সুদে। বাকি ৪ হাজার ৬৩১.৭৬ কোটি টাকা (২৭.৬%) যোগান দেয়া হবে GoB ফান্ড থেকে।

সেতুটি নির্মানের জন্য জাপানের দুটি কোম্পানীর সাথে চুক্তি করা হয়েছে, যার প্রাথমিক কিছুকাজ গত বছরের আগস্ট মাস থেকেই শুরু হয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে সেতুটির নির্মান কাজ সম্পন্নের পরিকল্পনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সেতুটি তৈরীতে যেসব উপকরণ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে তা বর্তমানের রেলসেতু গুলো থেকে আলাদা। সেতুটি Weathering Steel দিয়ে তৈরী হবে বিধায় তা প্রচলিত রেলসেতু গুলোর ন্যায় নিয়মিত বিরতিতে রঙ করতে হবে না। সেতুটির ফাউন্ডেশনে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবেতা জাপানের বাইরে খুব কম ব্যবহৃত হয়। ট্রেনের চাকার ঘর্ষনে রেললাইনগুলো ক্ষয়ে যাওয়া কমাতে বিশেষ ধরণের উপকরণ ব্যবহার করা হবে। এছাড়া ব্রিজের সংযোগ স্থলে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে তাতে ব্রিজটির নিজস্ব ওজন কম হবে। রেলসেতুটির অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলো এরকমঃ

(ক) পাশাপাশি দুটো ডুয়েলগেজ লাইন থাকায় কোন ট্রেনকে সেতু পার হওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে না।
(খ) দৈনিক সর্বোচ্চ ৮৮টি ট্রেন উভয়দিকে চলাচল করতে পারবে।
(গ) সেতুতে ব্রডগেজ ট্রেন ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিমি বেগে এবং মিটারগেজ ট্রেন ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১০০ কিমি বেগে চলতে পারবে।
(ঘ) যেকোন ওজনের মালবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলতে পারবে।
(ঙ) সেতুটির ওপর দিয়ে একইসঙ্গে একাধিক লোকোমোটিভ দিয়ে ট্রেন চালানো যাবে।
(চ) সৈয়দপুর ও পার্বতীপুরের ওয়ার্কশপগুলোতে ভারী মেরামতের জন্য পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের রোলিংস্টক সেতু র ওপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

লেখক পরিচিতিঃ

আমিনুর রহমান
অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
বাংলাদেশ রেলওয়ে।

BRFG BRFG

Related post

Leave a Reply